যারা ভুটান ভ্রমন করতে ইচ্ছুক কিন্তু সঠিক গাইডলাইন এর কারণে যেতে পারছেন না তাদের জন্য এই পোষ্ট আশা করি উপকৃত হবেন। পরিচ্ছন্ন শহর, সুসভ্য নাগরিক, গহীন জঙ্গলে ছাওয়া পাহাড় বা দূষণহীন নদী দেখে যদি আমাদেরও যদি একসময় আমাদের দেশে এই জিনিসগুলো নিশ্চিত করার আকাঙ্খা জাগার কোন সম্ভাবনা থাকে, তাহলে আমি বলবো ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য মারামারি, ধরাধরি, দালালের পেছনে না ছোটাছুটি না করে বরং ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিয়ে ঘুরে আসুন সুন্দর সুসভ্য দেশ ভুটান, একই খরচে। আর চাইলে আরেকটু বেশি খরচে বিনা ভিসায় আকাশপথে তো যেতে পারেনই।
ভুটান ভ্রমন ভিসা
ট্যুরিস্ট ভিসা ছাড়া আর কোন ভিসার জন্য টোকেন-ফোকেন, ক্যাম্প/ট্যাম্প লাগে না। ট্রানজিট ভিসার জন্যও না। পনের দিনের ভিসা দেবে, যাওয়ার সময় ৩ দিন, এবং আসার সময় ৩ দিন চাইলে ভারতও কিছুটা ঘুরে আসতে পারেন। আমরা যেমন কালিম্পং আর দার্জিলিং ঘুরে এসেছি আসার সময়। দার্জিলিং আগেও গিয়েছি, ভুটান থেকে ফিরে এবার আর ভাল লাগেনি। হোটেলের কাছাকাছি এলেই দালালরা ছেঁকে ধরে! রাস্তাঘাটে ময়লা তো আছেই বাংলাদেশের মত।
খরচ: শ্যামলির শিলিগুড়ি-ঢাকা আসা-যাওয়া টিকেট ৩০০০ টাকা (এসি বাস)
ভিসা প্রসেসিং ফি ৬০০ টাকা
এনডোর্সমেন্ট ফি ১৩০-৫০০ টাকা (ব্যাংক ভেদে)
চ্যাংড়াবান্ধা থেকে জয়গাঁও ট্যাক্সিতে জনপ্রতি ৩০০-৩৫০ রুপি। বাসে গেলে ময়নাগুড়ি থেকে জয়গাঁও, অর্ধেকের কম খরচ।
জয়গাঁও ইমিগ্রেশনের কাজ সেরে ভুটান গেইট দিয়ে ফুন্টসোলিং হেঁটে ঢুকতে হবে, কোন খরচ নাই। বাংলাদেশে থাকতেই মোবাইল ফোনে গুগুল ম্যাপে জায়গাগুলো দেখে রাখবেন, পরে নেটওয়ার্ক ছাড়াও ক্যাশের জমে থাকা ম্যাপ দিয়ে পথ চিনতে পারবেন। এটা করলে ভেঙে ভেঙেও বাসে চলাচল করা সম্ভব। তাতে সময় বাঁচে।
ফুন্টসোলিংয়ে ৮০০-১২০০ নিউলট্রামে (Ngultrum, গুলট্রাম নয়) হোটেলে ঝকঝকে ডাবল রুম পাবেন, গিজার সহ। অর্থাৎ মাথাপিছু খরচ ৪০০-৫০০ নিউ।
খাওয়া খরচ আপনার ওপর। মোমো/থুকপা খেলে ৪০-৬০ নিউ, ভাত খেলে ১৩০-২৫০ নিউ লাগবে। চা ২০ নিউ। মিনারেল ওয়াটার না কিনলেও পারেন, ওদের নরমাল পানি ভাল। রুপি আর নিউলট্রামের ভ্যালু একই। রুপিও চলে পুরো ভুটানেই।
ফুন্টসোলিং পৌঁছেই পরের দিন দুপুরের বাসের টিকিট কেটে রাখলে থিম্পু যেতে পারেন বাসে। ২৪০ নিউ লাগবে। এই ফাঁকে ফুন্টসোলিং দেখে নিন। সুন্দর আছে। হেঁটেই দেখুন, ভালমত দেখতে পাবেন। ছোট্ট শহর। পাশে সুন্দর নদী, মধ্যদিয়ে ঝর্ণা বয়ে গেছে। পাহাড় তো আছেই। মানুষও দেখার মত। প্রায় সবাই খুব সুন্দর ইংরেজি বলে, ফলে যোগাগোগে সমস্যা হবে না। আর যারাহিন্দি বলতে পারেন, তাদেরও সমস্যা হবে না। ট্যাক্সিতে থিম্পু গেলে মাথাপিছু ৬০০ নিউ লাগবে। বাসের টিকিটের সংকট আছে, বাসও খুব বেশি না।
থিম্পুতে হোটেল খরচ/খাওয়া খরচ ফুন্টসোলিংয়ের মতই। অর্থাৎ দিনে ১ হাজার টাকায়ই হয়ে যাবে। ট্যাক্সি ছাড়াও ঘোরা সম্ভব, মজাই লাগে। দু একটা জায়গায় ট্যাক্সি খরচ যোগ করতে হবে। শেয়ার করলে খরচ কমই।
থিম্পুএক রাত থেকে পরদিন সকালে রওনা দিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি চলে আসতে পারেন সারা দিনে। রাতটা কাটিয়ে পরের দিন বর্ডার ক্রস করে দেশে ঢুকতে পারেন।অথবা শিলিগুড়ি না এসে ফুন্টসোলিংয়ে, অর্থাৎ ভুটানেই রাতটা কাটিয়ে পরদিন বিকালে চ্যাংড়াবান্ধা ক্রস করতে পারেন।
এ পর্যন্ত যাওয়া আসা ও ভুটান / ভারতে ৩ রাতের খরচ মিলে বোধহয় ১০ হাজার টাকার মতো হলো। বাসে করে পারোও যেতে পারবেন, প্রতি দিনের জন্য এক-দেড় হাজার টাকা যোগ করুন ।
এই লিংকে (http://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa/index.html) গিয়ে নিজে নিজেই ভারতের ভিসার ফরম পূরণ করুন, তারপর প্রিন্ট নিয়ে গুলশান ভিসা সেন্টারে (IVAC) চলে যান প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ (ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য যা লাগে)। আর ভুটান বর্ডারে অন অ্যারাইভেল ভিসা পাবেন ৭ দিনের।প্রয়োজনে থিম্পুতে গিয়ে আরও কয়েকদিন এক্সটেন্ড করে নিতে পারেন। ফুন্টসোলিং, পারো, থিম্পু, পুনাখা/ওয়াংদি ও বুমথাং। ফেরার পথে ভারতে কালিম্পং ও দার্জিলিং ঘুরে আসতে পারেন।তাতে খরচ একটু বাড়বে।
চারজন গেলে ভাল হবে, রুম ও ট্যাক্সি শেয়ার করতে পারবেন আরামে। তবে যত বেশ ভ্রমণসঙ্গী, তত ফ্যাকরা। কেউ সকালে ঘুম থেকে উঠবে না, কেউ নিজের পানির বোতল নিজে বহন করবে না, কেউ এখানে যেতে চাইবে, কেউ ওখানে। আমার হিসাবে দুজনই বেস্ট। কোনভাবেই ৩ জন বা ৫ জন নয়।
বিদ্র: ভুটান পরিচ্ছন্ন দেশ, সেটাকে পরিচ্ছন্নই রাখবেন দয়া করে। রাস্তা পার হবেন জেব্রা ক্রসিংয়ে, নিয়ম মেনে। সবার সাথে বিনীত আচরণ করবেন, যেন বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণ্ণ থাকে। মনে রাখবেন, ওরা প্রতিবেশি অনেক দেশের (!) মানুষের চাইতে বাংলাদেশিদের শ্রদ্ধা করে। শ্রদ্ধার দাম দেবেন অনুগ্রহ করে।
ঘড়ি দেখে চলুন। ওদের সকাল ৮ টার বাস ৮:০০ বাজেই ছাড়ে। আধঘণ্টা আগে রিপোর্ট করার নিয়ম। ওয়াংদিতে আমাদের দেরি দেখে ফোন দিয়েছিল। আমরা পৌঁছাবার পর বাস ছাড়লো, তাও নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট আগেই, ৭:৫৬ মিনিটে, কারণ যাত্রী সবাই চলে এসেছে। দেরী করলে বাস মিস করবেন, তখন আর ১০ হাজার টাকায় হবে না।
এই সংবাদটি 1569 বার পঠিত হয়েছে
একজন দেশপ্রেমী প্রবাসী মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের সফলতার গল্প
আমাদের শিক্ষক – আমাদের কর্তব্য ছেলেটিকে দেখতে মণ্ডপে ২৫ বার গিয়েছিলাম : অরুণা ইনসুলিন নিতে আর ইঞ্জেকশন নয় ঘুরে আসুন ভুটান মাত্র দশ হাজার টাকায়
‘দিল বেচারা’ ছবির নায়িকা সাঞ্জানা সাংঘাই বলিউড ছাড়ছেন!!
শুকনা কাশি ও সর্দি দূর করে এলাচ
বলিউড নায়ক সুশান্তের টাকায় হবে ফাউন্ডেশন, তার বাড়ি হবে জাদুঘর
মুম্বই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
শখের বশে সুখের বাগান বাগান তো নয়,যেন এক টুকরো ভালোবাসা
প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত
মন্তব্য দিতে চান তাহলে Login করুন, সদস্য না হলে Registration করুন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : এস এম আজাদ হোসেন
নির্বাহী সম্পাদক : সৈয়দা আফসানা আশা
সকালের আলো মিডিয়া ও কমিউনিকেশন্স কর্তৃক
৮/৪-এ, তোপখানা রোড, সেগুনবাগিচা, ঢাকা-১০০০ হতে প্রকাশিত
মোবাইলঃ ০১৫৫২৫৪১২৮৮ । ০১৭১৬৪৯৩০৮৯ ইমেইলঃ newssokaleralo@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদপ্তরে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
Developed by IT-SokalerAlo